৳ ৪০০ ৳ ৩৪০
|
১৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER
"তিব্বতে সওয়া বছর" বইটির প্রথম অংশের লেখাঃ
রাহুল সাংকৃত্যায়নের 'তিব্বতে সওয়া বছর’ বহুল পঠিত, বহুল আলােচিত, অসাধারণ প্রতিভাদীপ্ত একটি গ্রন্থ। এই গ্রন্থে লেখক তার তিব্বত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে লেখক এই গ্রন্থে দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব নিয়েও আলােচনা করেছেন। আলােচনা করেছেন ভারতবর্ষের হারিয়ে যাওয়া অতীত ঐতিহ্য ও গৌরব নিয়ে। অত্যন্ত সহজ সরল ভাষায় তার এই আলােচনা যে কোন পাঠককে শুধু আকৃষ্টই করে না বিস্মিতও করে। কারণ গবেষণার বিষয়াদি তিনি কাহিনী আকারে বর্ণনা করেছেন। তার এই বর্ণনা কৌশল ও রচনাশৈলী সম্পূর্ণ নতুন ধরনের।
তাই পাঠক এই গ্রন্থ পাঠকালে বিস্ময়ে হতবাক হয়। শুধু তিব্বতে সওয়া বছর নয়’ পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়নের কম বেশি সকল বইয়ের রচনাকৌশল ও রচনাশৈলী সম্পূর্ণ নতুন ধরনের, নতুন ধারার। এ বিষয়ে লেখকের আর একটি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ভােলগা থেকে গঙ্গা'র কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। এতে লেখক ছােট ছােট সুর মধ্য দিয়ে সমাজ বিকাশের চমৎকার চিত্র এঁকেছেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিক ও তাত্ত্বিক হায়দার আকবর খান রনাে বলেছেন- ‘ছােট ছােট গল্পের আকারে সমাজ বিকাশের ইতিহাস তুলে ধরা এবং একই সঙ্গে ছােট ছােট বাক্যালাপের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক চেতনার উন্মেষ ঘটানাের এমন প্রয়াস এর আগে কখনাে দেখিনি। ভারতীয় ভাষার তাে নয়ই, সম্ভবত অন্য কোনাে ভাষাতেও নেই।
এক আশ্চর্য প্রতিভার অধিকারী রাহুল সাংকৃত্যায়ন ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও পণ্ডিত ব্যক্তি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ না করেও তিনি রাশিয়ার বিখ্যাত লেনিন গ্রাদ বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরাে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি একই সঙ্গে দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব নিয়েও গবেষণা করেছেন এবং এ বিষয়ে পৃথক পৃথক বইও লিখেছেন। এখানে বলা আবশ্যক তিনি শুধু লেখক, গবেষকই ছিলেন না, ছিলেন তার যুগের অন্যতম সেরা বিপ্লবী। এই অসাধারণ প্রতিভাধর বিপ্লবী তাঁর যৌবনে হিমালয় পেরিয়ে পদব্রজে তিব্বত গিয়েছিলেন। তিব্বতে সওয়া বছর’ তার সেই তিব্বত ভ্রমণের ফসল। নাম ‘তিব্বতে সওয়া বছর' হলেও এই গ্রন্থে লেখক নেপাল ও ভুটান ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও বর্ণনা করেছেন।
উল্লেখ্য পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন তিব্বত যাত্রা করেন শ্রীলঙ্কার কলম্বাে থেকে এবং এই যাত্রাপথে তাকে নেপাল, ভুটান ও সিকিম (সিকিম সেই সময়। স্বাধীন রাজ্য ছিল) হয়ে যেতে হয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তিনি তার সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন বইটিতে। একইসঙ্গে লেখক তিব্বতের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের এক চমৎকার চিত্র এঁকেছেন। এতে সেই সময়ের রাজনীতি, অর্থনীতির চিত্রের পাশাপাশি তিব্বত, নেপাল ও ভুটানের জীবনধারার এক অসাধারণ বর্ণনা দিয়েছেন। বর্ণনা দিয়েছেন তিব্বতের। শিক্ষা ব্যবস্থা, আহার, বিহার ও বেশ ভুষার। ফলে এ বইটিতে শুধু ভ্রমণ বৃত্তান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বইটি একটি গবেষণা ও ইতিহাস বিষয়ক বইতেও রূপ নিয়েছে। তাই তার এই ভ্রমণকাহিনী ভ্রমণ সাহিত্যে এক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। যা রাহুল সাংকৃত্যায়নের লেখনির বিশেষ বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন।
Title | : | তিব্বতে সওয়া বছর |
Author | : | রাহুল সাংকৃত্যায়ন |
Publisher | : | তরফদার প্রকাশনী |
ISBN | : | 9789849332268 |
Edition | : | 1st Published, 2018 |
Number of Pages | : | 256 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
রাহুল সাংকৃত্যায়ন তাঁর জন্ম ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে সনাতন হিন্দু ভূমিহার ব্রাহ্মণ পরিবারে। জন্মস্থান উত্তর প্রদেশের আজমগড়ের একটি ছোট্ট গ্রাম। তাঁর আসল নাম ছিল কেদারনাথ পাণ্ডে। ছোটোবেলাতেই তিনি মাকে হারান। তাঁর পিতা গোবর্ধন পান্ডে ছিলেন একজন কৃষক। বাল্য কালে তিনি একটি গ্রাম্য পাঠশালায় ভর্তি হয়েছিলেন। আর এটিই ছিলো তাঁর জীবনে একমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। অষ্টম শ্রেণী অবধি অধ্যয়ন করেছিলেন। এখানে তিনি উর্দু ও সংস্কৃতের উপর প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি বহু ভাষায় শিক্ষা করেছিলেন যথা : হিন্দি, উর্দু, বাংলা, পালি, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি, ইংরেজি, তিব্বতি ও রুশ। পুরস্কার তালিকা পদ্মভূষণ (১৯৬৩) সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৫৮) ব্যক্তিগত জীবন জালিওয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকান্ড (১৯১৯) তাঁকে একজন শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী কর্মীতে রূপান্তরিত করে। এ সময় ইংরেজ বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে তাকে আটক করা হয় এবং তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। এ সময়টিতে তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ সংস্কৃতে অনুবাদ করেন। পালি ও সিংহল ভাষা শিখে তিনি মূল বৌদ্ধ গ্রন্থগুলো পড়া শুরু করেন। এ সময় তিনি বৌদ্ধ ধর্ম দ্বারা আকৃষ্ট হন এবং নিজ নাম পরিবর্তন করে রাখেন রাহুল (বুদ্ধের পুত্রের নামানুসারে) সাংকৃত্যায়ন (আত্তীকরণ করে যে)।, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি বিহারে চলে যান এবং ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ-এর সাথে কাজ করা শুরু করেন। তিনি গান্ধিজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন এবং এসময় তিনি গান্ধীজী প্রণীত কর্মসূচীতে যোগদান করেন। যদিও তাঁর কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ছিলো না, তবুও তার অসাধারণ পান্ডিত্যের জন্য রাশিয়ায় থাকাকালীন লেনিনগ্রাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে শিক্ষকতার অনুরোধ করা হয়। তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন। ভারতে এসে তিনি ডঃ কমলা নামক একজন ভারতীয় নেপালি মহিলা কে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান হয়, কন্যা জয়া ও পুত্র জিৎ। পরে শ্রীলংকায় (তৎকালীন সিংহল) বিদ্যালঙ্কার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এখানে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দার্জিলিংয়ে, ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১৪ এপ্রিল তারিখে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
If you found any incorrect information please report us